আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং রাজধানীসহ সারা দেশে চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাই ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। তবে, এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এ উপদেষ্টা।
সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, তারা যে কারণে পদত্যাগ করতে বলছেন, সেই পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারলে তো পদত্যাগের প্রশ্ন আসবে না।
রোববার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে বারিধারা ডিওএইচএসের নিজ বাসায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষার্থীরা আপনার পদত্যাগ দাবি করেছেন, আপনিও কি তাই ভাবছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা চায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি। সেটার জন্য যা যা করা দরকার আমি করব। তাহলে তো আর পদত্যাগের কোনো প্রশ্নই আসে না। দেশের এমন পরিস্থিতিতে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়, আমি সেই ব্যবস্থা করছি। আগের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে, সামনে আরও উন্নতি হবে।’
সব বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে— উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘তারা টহল কার্যক্রম আরও বাড়াবে। আগামীকাল (সোমবার) থেকে যেন কোথাও কিছু না ঘটে, সে ব্যাপারে তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) ব্যবস্থা নেবে। যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভালোভাবে কার্যক্রম করতে না পারে, তাদের বিরুদ্ধেও আমি অ্যাকশন নেব।’
‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আর অবনতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। দেশকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তাদের কাউকে আমরা ছাড় দেব না।’
প্রসঙ্গত, রোববার রাতে রাজধানীর বনশ্রী ও মোহাম্মদপুরে পৃথক দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই দুই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে রাজপথে নেমে আসেন। প্রথমে ঢাবির কবি বিজয় একাত্তর হলের সামনে মিছিল নিয়ে জড়ো হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল প্রাঙ্গণে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দিতে ডাকাডাকি করেন। পরে তারা মাস্টার দা সূর্যসেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল হয়ে রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন।
এ সময় তারা ‘জুলাইয়ের রক্তের দাম চাই, নিরাপদ দেশ চাই’, ‘সারা দেশে অপরাধ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘এক দুই তিন চার, জাহাঙ্গীর গদি ছাড়’, ‘দফা এক দাবি এক, জাহাঙ্গীরের পদত্যাগ’, ‘মা বোনদের নিরাপত্তা দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’— ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।