পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের লাইন অফ কন্ট্রোলের (এলওসি) কাছে একটি ভারতীয় কোয়াডকপ্টার ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আকাশসীমা লঙ্ঘন করে মঙ্গলবার পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকে পরে ভারতের গোয়েন্দা ড্রোনটি। পরে আজাদ কাশ্মীরের ভিম্বার জেলার মানাওয়ার সেক্টরে গুলি করে সেটিকে ভূপাতিত করা হয়।
নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে দেশটির একাধিক গণমাধ্যম জানায়, পাকিস্তান তার আকাশসীমা লঙ্ঘনকে ব্যর্থ করে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একটি ভারতীয় কোয়াডকপ্টারকে সফলভাবে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ভারত ড্রোনটি ব্যবহার করে নজরদারি চালানোর চেষ্টা করেছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনী সময়মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে শত্রুর এই ঘৃণ্য প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।’ প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা সূত্র এই ঘটনাকে ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সতর্কতা, পেশাদার দক্ষতা এবং প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতির স্পষ্ট প্রমাণ’ বলে অভিহিত করেছে। সূত্র আরও জানায়, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী সর্বদা শত্রুর যেকোনো আগ্রাসনের তাৎক্ষণিক এবং কার্যকর প্রতিক্রিয়া দিতে প্রস্তুত। সমগ্র জাতি প্রতিটি ফ্রন্টে শত্রুকে উপযুক্ত জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে একত্রিত হয়েছে।’
এর আগে গত পাঁচদিন ধরে কাশ্মীর সীমান্তে গোলাগুলিতে জড়ায় পাকিস্তান ও ভারতের সেনারা। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের এবং পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে রাতভর একে অপরের দিকে গুলির ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সবশেষ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সোমবার বলেন, পাকিস্তান ভারতের যে কোনো অনুপ্রবেশের জন্য প্রস্তুত তারা। তিনি রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা আমাদের বাহিনীকে শক্তিশালী করেছি। সেই পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
এছাড়া পাকিস্তানের গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘দিগন্তে যুদ্ধ চলছে, পরবর্তী দুই থেকে তিন দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ মূলত ২২ এপ্রিল ভারত-অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর এক প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনার পর থেকে দু’দেশের মধ্যে এমন সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ভারত হামলার পেছনে সীমান্তপারের সংযোগ থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও। তবে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি দেশটি। অন্যদিকে পাকিস্তান এসব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ঘটনাটির নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন যাতে সত্য উদঘাটিত হয়।