Tuesday, April 29, 2025

ভিন্ন ধর্মাবলম্বী কেউ প্রার্থী হতে চাইলে ‘মোস্ট ওয়েলকাম’

আরও পড়ুন

ভিন্ন ধর্মাবলম্বী কেউ প্রার্থী হতে চাইলে ‘মোস্ট ওয়েলকাম’
অতীতে যারা জুলুম করেছেন তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা এমন রাজনীতি করতে চাই না, সামনে এসে আমাকে সম্মান করবে এবং পেছনে গেলে গালি দেবে। বরং আমরা নানা ফুলের বাগান গড়তে চাই। আমরা আমাদের ফুলের বাগানে আর হুতোম প্যাঁচা বসুক তা আর চাই না।

তিনি আশ্বাস নয়, আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আগামীতে যদি পছন্দ করেন তাহলে জামায়াতে ইসলামীর ব্যানারে নির্বাচন করেন। জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে আপনারা জনগণের কাছে যাবেন, তবে গলা ছেড়ে মুক্ত মনে নিজেরা নিজেদের কথা জনগণের কাছে বলবেন। আপনারা আসলে মোস্ট ওয়েলকাম, না আসলে অন্তত ভালোবাসার জায়গাটা দিন। সেটা কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য না আপনার নিজের ও দেশের জন্য।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনের সোশ্যাল গার্ডেন হলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুনঃ  জামায়াতের নায়েবে আমিরের ব্যক্তিগত পিওন হিন্দু

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, আমরা তেমন রাজনীতি করতে চাই সামনে আসলে আমাদের পরম দোষগুলো দেখিয়ে দেবে। এ রাজনীতি আমরা সমাজে চালু করতে পারলে সমাজের যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো। তাহলে সমাজটা বদলে যাবে। আমরা কয়েকটা মন্দির পাহারা দিতে পারবো, এটা কতদিন পারব? আমরা এই সংস্কৃতির অবসান চাই। যদি মসজিদ পাহারা দিতে না হয় তাহলে মন্দির কেন পাহারায় দিতে হবে?

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকে আপনাদের কাছে আমরা ভোট চাইতে আসিনি। ভোট আপনাদের বিবেকের প্রতিধ্বনি। কাকে দিবেন না দিবেন বিবেক আপনাকে গাইড করবে। কিন্তু আমরা সুষ্ঠু সমাজের জন্য একটি হেলদি সোসাইটির জন্য আমরা সকলে মিলে মিশে কাজ করতে চাই। স্রষ্টা ছাড়া কারো করুণার পাত্র হতে চাই না। আমি যদি না চাই তাহলে আর কেউ চাক সেটা কেনো চাইবো।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকে তাকালে আমরা লজ্জা পাই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা অমুসলিম ভাই-বোনদের সম্পদ রক্ষায় মাঠে ছিল। আমরা কোনো অমুসলিমের অধিকার হরণের পক্ষে নই। এটাই ইসলামের নীতি এবং সেটিই জামায়াত অনুসরণ করে। আমরা সংখ্যালঘু মানি না। সবাই এ দেশের নাগরিক। সবাই সমান সুযোগ পাবে। জামায়াত কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।

সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমরা সবসময় ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং ৫ আগস্টের পর দেশবাসী ও বিশ্ববাসী তার প্রমাণ দেখেছে। আমরা ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ অনেকগুলো মন্দির ভিজিট করেছি। মূলত আমরা সারাদেশে মন্দির পাহারা দিয়েছি। এটি আমাদের মানবিক দায়িত্ব। যদিও একটি চক্রান্তকারী পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করেছিল। তবে আমরা ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।

আরও পড়ুনঃ  ছাড়া নারীদের এনআইডির দাবিতে আল্টিমেটাম

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি দীনবন্ধু রায়, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের অনুপম বড়ুয়া, সিদ্ধেশ্বরী সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ও পুলিশের সাবেক ডিআইজি নির্বাক চন্দ্র মাঝি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের নেতা লিটন কুমার বড়ুয়া, ব্যাপ্টিস্ট চার্চের বাস্তুর তপন রায়, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের স্বরুপানন্দ ভিক্ষু, শুভাশিস, পল্টন দাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ধর্মের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর জামায়াতের কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ