Monday, June 16, 2025

দুই ইস্যুতে শিবিরের প্রতিবাদ

আরও পড়ুন

যারা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা এবং গুম, খুন, জুলুম-নির্যাতনের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে কাজ করেছে, তারাই ডাকসু ও অন্যান্য ছাত্র সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুল করা এবং ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এই অভিযোগ তুলে এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কথা বলা, ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় রাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও উন্নয়নে ছাত্রদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য ছাত্র সংসদ অত্যাবশ্যক। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটে।

ছাত্র সংসদের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও প্রতিভার বিকাশ ঘটে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রসংগঠনগুলোকে সাধারণ ছাত্রদের নিকট যেতে হয় এবং এর ফলে ছাত্রদের প্রতি ছাত্রসংগঠনগুলোর দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠিত হয়।’

আরও পড়ুনঃ  হাতিরঝিলে ‘অস্ত্র ঠেকিয়ে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ে’র ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি শুটিংয়ের

তারা বলেন, ‘২৮ বছর ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন থেকে ছাত্ররা বঞ্চিত রয়েছে। জুলাই বিপ্লবের পর সর্বস্তরের ছাত্ররা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবি জানিয়ে আসছে।

কিন্তু নিজেদের পরাজয় ঢাকতে স্বৈরাচারের দোসর কয়েকটি ছাত্রসংগঠন এই নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। যখনই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ উদ্দেশ্যে কোনো মতবিনিময় সভার আয়োজন করে, তখনই তারা ফ্যাসিবাদী কায়দায় ছাত্রদের বিভিন্ন অংশকে ডিহিউম্যানাইজ করে এবং বিভিন্নভাবে ট্যাগিং করে সেই সভাগুলোকে ভণ্ডুল করার চেষ্টা করে থাকে।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘স্বৈরাচারের প্রধান হাতিয়ার ছিল বিভিন্নভাবে দেশের মানুষ, রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলোকে বিভক্ত করে রাখা। এরই অংশ হিসেবে ফ্যাসিস্ট এনাবেলার এই সংগঠনগুলো গণজাগরণ মঞ্চ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে এমনভাবে ইসলামবিদ্বেষ ছড়িয়েছিল যে, শুধুমাত্র ইসলামপন্থি, আলেম–এই পরিচয়ের কারণে গুম, খুন, নির্যাতনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ  নৌকার প্রার্থী ঠাঁই পেলেন বিএনপির কমিটিতে

এই হাতিয়ার ব্যবহার করেই ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৫ বছর এ দেশের মানুষের ওপর শোষণ ও নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছে।’

তারা আরো বলেন, ‘ছাত্র-জনতা সকল বিভেদের দেওয়াল ভেঙে ফেলতে পেরেছিল বলেই জুলাই অভ্যুত্থান সংঘটিত হতে পেরেছিল। ফ্যাসিস্ট এনাবেলার ছাত্রসংগঠনগুলো স্বৈরাচার পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া হিসেবে আবার দেশে বিভেদের রাজনীতি চর্চা শুরু করেছে। তারা হুবহু ফ্যাসিস্টের ভাষায় তাদের বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে চলেছে। একই সাথে তারা এ দেশের ইসলামী ভাবধারায় উজ্জীবিত ছাত্র-জনতাকে আগের মতো ডিহিউম্যানাইজ করে ফ্যাসিস্ট শক্তির পক্ষে কাজ করছে।

আশঙ্কা প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘চল্লিশ বছর আগের তথাকথিত “পরিবেশ পরিষদ”, যার কোনো আইনত বা নৈতিক ভিত্তি নেই, তার একটি ফ্যাসিস্ট সিদ্ধান্তকে উদ্ধৃত করে ছাত্রশিবিরকে শিক্ষাঙ্গন থেকে দূরে রাখা ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের একটি পদক্ষেপ।’

আরও পড়ুনঃ  শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট, আমি নিজেই ৬ বছর চাকরি বঞ্চিত ছিলাম: তুরিন

নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘৫ আগস্ট-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে পুনরায় ছাত্রসমাজকে লাল সন্ত্রাসের হুমকি দিয়ে সহিংস রাজনীতি প্রবর্তনের ঘোষণা দেওয়ার পরও এই সকল ছাত্রসংগঠনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি, যা জাতির জন্য লজ্জাজনক এবং একই সঙ্গে গভীর উদ্বেগজনক।’

তারা বলেন, ‘একটি উন্নত, অগ্রসর, সমৃদ্ধ, শক্তিশালী ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের কোনো বিকল্প নেই।’

শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠন করার উদ্দেশ্যে সকল উগ্রতা ও সম্প্রীতি বিনষ্টকারী কর্মকাণ্ড থেকে সকল ছাত্রসংগঠনকে বিরত থাকার জন্য ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ