অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমরা এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, যখন হাজার বছরের বড় পরিবর্তন আমাদের হাত দিয়ে ঘটছে। এ পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি আমরা নিজেরাই।”
ড. ইউনূস বলেন, “এই সময়টা আমাদের জন্য একটি ক্ষুদ্র ‘উইন্ডো অফ অপরচুনিটি’। এখনই আমাদের কাজ শুরু করতে হবে, কারণ এই মুহূর্তে সারা বিশ্বের নজর আমাদের ওপর। আমি নিজেও বুঝতে পেরেছি, আমার ভেতরে অনেক ক্ষমতা আছে। তাহলে এই ক্ষমতা আমি ব্যবহার করবো না কেন? যেটুকু সামর্থ্য আছে, তা নিয়েই আমি কাজ করব। আমি শুধু বলব না—এইটা দিন, ওইটা ঠিক করে দিন—এভাবে বললেই চলবে না। কাজ বন্ধ করে বসে থাকলে কিছু হবে না। অনেক সহজ কিছু কাজ আছে, যেগুলো আগে যেভাবে হয়েছে, এখনো সেভাবেই হচ্ছে। এই ধরণের ‘আগের আমলের’ চিন্তা-ভাবনা আমাদের মাথা থেকে সরাতে হবে। এখনই সময় এসব পুরনো ধ্যান-ধারণা হাওয়ায় উড়িয়ে দেওয়ার।”
তিনি বলেন, “আগে আমরা সব কিছু মেনে নিয়ে চলতাম। এমনকি যদি এক লাখ টাকা দিয়ে একটি বালিশ কিনতে হতো, তাও কিনতাম—কারণ নিয়ম ছিল সে রকম। কিন্তু এখন সব পাল্টে যাচ্ছে। পুরনো কাঠামো ও ব্যবস্থাগুলো আর কার্যকর নয়। পরিবর্তনের এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে, কারণ আগামী প্রজন্ম আমাদের কাজের মাধ্যমেই ইতিহাস মূল্যায়ন করবে।”
স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “শিক্ষক যেমন ক্লাসরুম, ছাত্র চায়, ডাক্তার তেমন কিছু চায় না। রাস্তায় কেউ পড়ে থাকলে, শ্বাস নিতে না পারলে, আমি ডাক্তার—আমাকে তখনই এগিয়ে যেতে হয়। এটি একটি তাৎক্ষণিক ও মানবিক দায়িত্ব। কেউ যদি বলে, ‘আমি অফিস যাচ্ছি’, তা কোনো অজুহাত হতে পারে না। চিকিৎসককে প্রস্তুত থাকতে হয় সব অবস্থাতেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের অনেকেই কাজ না করে অভিযোগ করে যাচ্ছেন—‘এটা পাইনি’, ‘ওটা পাইনি’। কিন্তু আমি বলছি, যতটুকু আমাদের হাতে আছে, সেটা দিয়েই কাজ শুরু করা দরকার। কারণ পরিবর্তনের এই ক্ষুদ্র সুযোগ জানালাটি আমাদের সময়েই খুলেছে। আজকের দিনটি আর ফেরত আসবে না। তাই আজকের কাজ আজই শেষ করতে হবে।”