Monday, June 16, 2025

গভীর রাতে ভারতের রাজ্যসভাতেও পাস হলো ওয়াকফ বিল

আরও পড়ুন

গভীর রাতে ভারতের রাজ্যসভাতেও পাস হলো ওয়াকফ বিল
ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার পর এবার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হয়ে গেল ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল। রাজ্যসভার সদস্যদের মধ্যে বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ১২৮ জন, আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৯৫ জন সদস্য।

গভীর রাতের এই ভোটভুটির মধ্যদিয়ে উচ্চকক্ষে পাস হলো বিতর্কিত এই সংশোধনী বিলটি। এখন কেবল ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষরের অপেক্ষা। তিনি সই করলেই ৭০ বছরের পুরোনো আইন বদলে কার্যকর হবে নতুন আইন।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, লোকসভায় পাস হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সংসদের উচ্চকক্ষেও ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পাস হয়ে যাওয়ায় বিলটির আইনে পরিণত হওয়া শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা। প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু সই করলেই বদলে যাবে ৭০ বছরের পুরনো আইন।

আরও পড়ুনঃ  গাঁজার গাছ লাগিয়ে বিএনপি নেতা ছেলেকে বলেন ‘ফুলগাছ’

১৯৫৪ সালের আইনকে সংশোধন করে ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু ৩০ বছর পরে যে সংশোধনে অনুমোদন দিল ভারতীয় সংসদ, তাতে বোর্ডের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতার সবই বদলে যেতে চলেছে। সব বিরোধী দলেরই দাবি, ওয়াকফ আইনের এই সংশোধন ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতাকে নজিরবিহীনভাবে খর্ব করে দিচ্ছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সমস্ত বিতর্ক এবং সংশোধনী নিয়ে ভোটাভুটি শেষে বৃহস্পতিবার গভীর রাত ২টা ১৯ মিনিটে “ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫” পাস করানোর প্রস্তাব পেশ করেন সংসদীয় এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। ধ্বনিভোটের ফলাফলে বিরোধী শিবির সন্তুষ্ট হয়নি। তারা বিভাজন (ডিভিশন) চায়। ভোটাভুটি শেষে রাত ২টা ৩৪ মিনিটে ফল ঘোষিত হয়। তাতে দেখা যায় বিলের পক্ষে পড়েছে ১২৮টি ভোট। আর বিপক্ষে পড়েছে ৯৫টি ভোট। ৩৩ ভোটের ব্যবধানে ওয়াকফ বিল রাজ্যসভায় পাস হয়ে যায়। বিতর্ক চলে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।

আরও পড়ুনঃ  সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে শাফি মোদাচ্ছির গ্রেফতার

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে রাজ্যসভায় ওয়াকফ বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সংসদীয় বিষয়ক এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর ভাষণের মাধ্যমেই আলোচনা তথা বিতর্কের সূত্রপাত। রিজিজুর দাবি, ওয়াকফ সম্পত্তির অন্যতম লক্ষ্য হলো সেই সম্পত্তির মাধ্যমে মুসলিম সমাজের গরিব, নারী ও এতিম শিশুদের উন্নয়ন। নতুন আইনে বিপুল রাজস্ব আদায় হবে বলেও রিজিজু সংসদে দাবি করেন।

তবে অধিকাংশ বিরোধী দল এই বিলের বিপক্ষে কথা বলেছে। বলা হয়েছে, এই বিলের মাধ্যমে মেরুকরণের রাজনীতি করছে বিজেপি। শুধু তা-ই নয়, এই বিল যেভাবে পাস করানো হয়েছে সেই কার্যপ্রণালী নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই দেশের একাধিক মুসলিম সংগঠন এই বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে।

আরও পড়ুনঃ  ইসলামী ব্যাংকের সোয়া কোটি টাকা নিয়ে উধাও ক্যাশিয়ার

বিরোধীদের বক্তব্য, সংসদের বাইরে এই বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। বিরোধী ইন্ডিয়া জোট এককাট্টা হয়ে এই বিলের বিরোধিতা করেছে। তারা সংশোধিত বিলটিকে “অসাংবিধানিক” আখ্যা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটি বা জেপিসি বিরোধীদের মতামতে কর্ণপাত করেনি।

কংগ্রেস জানিয়েছে, সরকার সংখ্যালঘুদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। এআইএমআইএম-এর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি জানান, তিনি প্রতীকী পদক্ষেপে মহাত্মা গান্ধীর অনুসরণে এই আইন ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানালেন। তিনি বলেন, “২০১৩ সালে যখন লালকৃষ্ণ আদভানি, সুষমা স্বরাজের উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে বিলের সংশোধনী পাস হয় তখন কোনও বিতর্ক হয়নি”। তার প্রশ্ন, “তারা কি ভুল ছিলেন?”

অন্যদিকে, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার সংসদ সদস্য অরবিন্দ সাওয়ন্ত ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলমান সদস্য এবং ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালের সিইও পদে আমলা নিযুক্ত করার সমালোচনা করে বলেছেন, “সরকার কি মন্দির কমিটিতে অ-হিন্দুদের থাকার অনুমতি দেবে?”

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ