Sunday, March 16, 2025

ভ্যালেনটাইন্স ডে’র প্রবর্তন নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

আরও পড়ুন

আল্লাহ তা’আলা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি প্রবল আকর্ষণ দিয়ে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। এই কথা শুধু মানব সম্প্রদায়ের ওপর প্রযোজ্য না, সকল সৃষ্টি জীবের ওপরই প্রযোজ্য। এই আকর্ষণের মূল উদ্দেশ্য পৃথিবীর বুকে সৃষ্টির ধারাকে টিকিয়ে রাখা। এই আকর্ষণ থেকেই নারী-পুরুষ ঘর বাঁধে, তাদের যৌথ জীবনের ভেতর দিয়ে পৃথিবীতে আসে নতুন প্রাণ।

কিন্তু কোনো সমাজে যখন বিবাহবহির্ভূত দৈহিক সম্পর্ক সহজ হয়ে যায়, সেই সমাজের মানুষেরা বিবাহ থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে সেই সমাজের জন্মহারের ওপর। আর এ কারণেই অশ্লীলতা ও বিবাহবহির্ভূত দৈহিক সম্পর্কের ব্যাপারে ইসলাম অত্যন্ত কঠোর।

দুঃখজনক বিষয় হলো, মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে বিভিন্ন দিবস ও উৎসবের নামে অশ্লীলতা ও নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে তেমন একটি নোংরা দিবস। এই দিবসটির মাধ্যমে এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের নীতি-নৈতিকতা, শালীনতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের অনুভূতি নষ্ট করার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ আমরা সেন্ট ভ্যালেনটাইন ডে-র উৎপত্তি, ইতিহাস এবং এর ভয়াবহতা ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করব।

কোথা থেকে এলো এই দিবস

প্রাচীন রোমানগণ মধ্য ফেব্রুয়ারি বা ফাল্গুনের প্রথম দিনে ভূমি ও নারীর উর্বরতার জন্য দেবতার কাছে প্রার্থনা করত। ফাল্গুন মাস শ্যামলিমার প্রতীক। এই সময় প্রকৃতি সবুজ পত্রপল্লবে ছেয়ে যায়। তাদের ধারণা ছিল, পহেলা ফাল্গুনে প্রার্থনা করলে দেবতারা জমির উর্বরতা বাড়িয়ে দেবে এবং নারীরা অধিক সন্তানবতী হবে। এই দিনে প্রার্থনার জন্য তারা বিশেষ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। শুধু তাই নয়, দেবতাদের কৃপা, সুদৃষ্টি ও বর লাভের জন্য তারা নগ্ন হয়ে অশালীন নাচগান করত। এই উৎসবের নাম ছিল লুপারকালিয়া। লটারি ছিল এই অনুষ্ঠানের বিশেষ একটি অংশ। যুবকেরা একটি বাক্স থেকে লটারির কাগজ তুলত। কাগজে যে মেয়ের নাম থাকত, যুবক সেই মেয়ের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হতো।

পরবর্তীতে পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শতকে ইউরোপে যখন খ্রিস্টধর্মের বিজয় হলো, খ্রিষ্টীয় মোড়ক পরিয়ে এই লুপারকালিয়া উৎসবকে খ্রিষ্টানদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলা হলো। ঈসা আ. এর পর খ্রিস্টধর্মের ধারক-বাহকগণ এই কাজটি খুব নিপুণভাবে সম্পন্ন করেছেন। তারা যেখানেই গেছেন, সেই অঞ্চলের জনপ্রিয় আচার-অনুষ্ঠানকে আত্তীকরণ করে খ্রিস্টধর্মের লেবেল লাগিয়েছেন। এতে পোপদের জন্য খ্রিস্টধর্ম প্রচার-প্রসারের কাজটি সহজ হয়েছে।

ভ্যালেন্টাইন ডে-র উৎপত্তির ইতিহাস সংক্রান্ত আরও কিছু গল্প অনলাইনে পাওয়া যায়। ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন খ্রিষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসকের গল্প আপনারা জানেন। অনেক নারীর সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে তৎকালীন রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে বন্দি করেন। বন্দি অবস্থায় তিনি কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন এবং সেই মেয়ের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। আর তাই ঈর্ষান্বিত রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেন্টাইন স্মরণে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুনঃ  নগ্ন ছবি তুলে এমপি আনারকে কি করতে চেয়েছিল?

একটা সময় এই দিবসটির উদযাপন পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায়। কয়েক দশক পূর্বে ব্রিটেনে এই দিবসটির উদযাপন নতুন করে শুরু হয়। ব্রিটেনের কয়েকজন ব্যবসায়ী এর উদ্যোক্তা। তাদের মূল লক্ষ্য ব্যবসা ও অর্থনৈতিক স্বার্থ। ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের পুরো দেশ বরফে ঢেকে যায় বলে এই সময়টাতে তাদের ব্যবসা মন্দা থাকে। তারা ভাবে, ১৪ ফেব্রুয়ারির দিবসটি ফিরিয়ে আনা গেলে তাদের ফুল, চকোলেট ও গিফটের ব্যবসা চাঙ্গা হয়ে উঠবে। সেই ভাবনা থেকে ব্রিটেনে ভ্যালেন্টাইন দিবস নবরূপে উদযাপিত হতে শুরু করে।

পূর্বের আলোচনা থেকে আমরা দেখলাম, কথিত ভ্যালেন্টাইন ডে একদিকে যেমন পৌত্তলিক বিশ্বাস থেকে উৎসারিত একটি দিবস, যার সঙ্গে একাকার হয়ে মিশে আছে ঈমান বিধ্বংসী শিরকি বিশ্বাস। অপরদিকে আমাদের দেশে এটাকে বানানো হয়েছে চূড়ান্ত পর্যায়ের নোংরামি ও অশালীনতার দিবস।

আজ পৃথিবীর বহু দেশ এই দিবসটি উদযাপন করে থাকে। তবে তারা সেটাকে ভ্যালেন্টাইন ডে হিসেবেই পালন করে। ব্যতিক্রম আমাদের বাংলাদেশ। আমাদের দেশে দিবসটিকে ভালোবাসা দিবস হিসেবে পরিচিত করা হয়েছে। আপনারা বলুন, সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে’র বাংলা অনুবাদ কীভাবে ভালোবাসা দিবস হয়! সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে’কে ভালোবাসা দিবস বানানোর পেছনে যে রয়েছে এ দেশের তরুণ-তরুণীদের ঈমান ও চরিত্র হননের এক গভীর ষড়যন্ত্র, তা বোঝার জন্য খুব বেশি বুদ্ধিমান হওয়ার দরকার নেই।

দিবসটি বাংলাদেশে কীভাবে এলো

১৯৯৩ সালে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিক এবং সম্পাদক শফিক রেহমান বাংলাদেশে এই দিবসটির প্রচলন ঘটান। লন্ডনে পড়ালেখা করার সুবাদে তিনি পশ্চিমা সংস্কৃতির সংস্পর্শে আসেন এবং তার মাথায় সর্বপ্রথম এই নোংরা চিন্তার উদয় হয়। ভ্যালেন্টাইন ডে-কে ভালোবাসা দিবস আখ্যা দিয়ে তিনি নিজ সম্পাদিত পত্রিকায় এর প্রচার-প্রসার করেন। শুধু তাই নয়, তার অফিসে কেউ চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেলে প্রেমিকাকে সঙ্গে আনা বাধ্যতামূলক ছিল। যাদের সঙ্গে প্রেমিকা থাকত, চাকরিতে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হতো। এমনকি তার অফিসের সামনের রাস্তার নামকরণ করেন ‘লাভ লেন’ নামে।

এ দেশের মিডিয়া সব সময় এই ধরনের সাবজেক্টের জন্য ওঁৎ পেতে থাকে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শফিক রেহমানের আমদানিকৃত এই নোংরা দিবসটিকে তারা লুফে নেয় এবং স্বপ্রণোদিত হয়ে এর প্রচার-প্রসারে আত্মনিয়োগ করে। ফলে একজনের মাথায় উদয় হওয়া দিবসটি সম্পর্কে দেশের সব মানুষ জেনে যায় এবং অতিউৎসাহীরা উদযাপনও শুরু করে দেয়।

আরও পড়ুনঃ  নির্যাতন শেষে রাস্তায় ফেলে গেল প্রেমিক, জানা গেল হৃদয়বিদারক ঘটনা

এ দেশের ভ্যালেন্টাইন ডে একটি প্রতারণা

পূর্বের আলোচনা থেকে আমরা জেনেছি, ভ্যালেন্টাইন ডে-র সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রাচীন গ্রিক পৌত্তলিকদের শিরকি বিশ্বাস। এমন একটি দিবসের গায়ে ভালোবাসার মোড়ক লাগিয়ে মুসলিম সমাজে ছড়িয়ে দেয়া এবং মুসলমানদের তা পালনে উদ্বুদ্ধ করা জাতীয় প্রতারণা। কুরবানির ঈদকে ‘বিশ্ব খাদ্য-উৎসব দিবস’ নাম দিয়ে তা সব ধর্মের মানুষকে পালন করতে উদ্বুদ্ধ করা যেমন প্রতারণা, পৌত্তলিকদের প্রকৃতি পূজার দিনটিকে ভালোবাসা দিবস নাম দিয়ে তা মুসলিম সমাজে ছড়িয়ে দেয়াও একই রকম প্রতারণা। মুসলমানদের জন্য এই দিবস উদযাপন, উইশ করা, মেসেজ দেয়া, কার্ড বিতরণ কোনো কিছুই বৈধ নয়।

একজন মুসলিম সন্তান একটি দিবস উদযাপন করবে, আর দিবসটির পেছনের ইতিহাস সম্পর্কে কিছু জানবে না, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। মুসলমান কখনো নিজের ধর্ম সম্পর্কে অসতর্ক ও আত্মভোলা হতে পারে না। আজ মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার এটাই অন্যতম কারণ- তারা আত্মপরিচয়হীন, আত্মভোলা। অন্যভাবে বললে, আমাদের পরিকল্পিতভাবে আত্মভোলা করে রাখা হয়েছে। আমাদের চেতনাকে ভোতা করে দেয়া হয়েছে। আর আমরা এতটাই বেখবর ও উদাসীন- আমাদের বিরুদ্ধে সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত চলছে অথচ আমরা তার খবরও রাখি না। খুব আফসোস লাগে, যখন দেখি একজন যুবক টুপি পরে মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে এসে টিভির সামনে বসে ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে নির্মিত নাটক দেখে। আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ কোথায় হারিয়ে গেল!

অশালীনতার বিরুদ্ধে ইসলামের অবস্থান

অশালীনতা মানবসভ্যতার সবচেয়ে বড় শত্রু। মানবসভ্যতা টিকে আছে বৈবাহিক সম্পর্কের ওপর ভর করে। সমাজে যখন অশালীনতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যখন বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে নারী-পুরুষ অবাধে মেলামেশার সুযোগ পায়, তখন সেই সমাজের মানুষেরা বিবাহ থেকে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে। আর কোনো সমাজের যুবক-যুবতীরা যখন বিবাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, এক দুই প্রজন্ম পরে সেই সমাজের বিলুপ্ত হওয়া অবশ্যম্ভাবী। আর এ কারণে আমাদের স্বার্থে আমাদের কল্যাণকামী আল্লাহ তা’আলা অশালীনতার সব দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি আমাদের বিবাহ করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। শুধু তাই নয়, মুসলিম সমাজে অশালীনতা ছড়িয়ে পড়ুক যারা কামনা করে, উভয় জগতে তিনি তাদের কঠিন শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেছেন:

اِنَّ الَّذِیۡنَ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ تَشِیۡعَ الۡفَاحِشَۃُ فِی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَهُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ۙ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡ

অর্থ: নিশ্চয়ই যারা এটা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ুক, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জানো না। (সুরা নূর, আয়াত: ১৯)

অপর আয়াতে মহান আল্লাহ তা’আলা বলেছেন:

وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا ۖ إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا

আরও পড়ুনঃ  কুরআন হাফেজ তাকরিমের মর্মান্তিক মৃত্যু

অর্থ: আর তোমরা ব্যভিচারের নিকটেও যেও না, নিশ্চয় তা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ। (সুরা ইসরা:৩২)

আল্লাহ এই আয়াতে তার বান্দাদের ব্যভিচারের নিকটে যেতেও নিষেধ করলেন, অথচ ভ্যালেন্টাইন ডে-তে কাছে আসার গল্পের নামে ব্যভিচারের কাছে যেতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। খেয়াল করুন, তাদের স্লোগানটি হুবহু কুরআনের বিপরীত। এটা কিন্তু আপনাআপনি কাকতালীয়ভাবে হওয়ার কথা না। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো মতলববাজের মস্তিষ্ক কাজ করেছে। তাদের চিন্তায় কাছে আসে মানা প্রগতি আর দূরে থাকা মানে সেকেলেপনা।

আমাদের মিডিয়াগুলো নির্লজ্জের মতো এই বেহায়া অপসংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা করছে। তারা ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন করতে শেখাচ্ছে, কিন্তু এর ফলাফল দেখাচ্ছে না। আজ আমরা পত্রিকার পাতা খুললেই দেখতে পাই ধর্ষণের লোমহর্ষক বর্ণনা। সম্ভ্রম হারিয়ে অনেক মেয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। ডাস্টবিনে পাওয়া যাচ্ছে সদ্যভূমিষ্ট মানবশিশু। অনেক নারী হত্যা করছে জীবন্ত ভ্রূণ। বাবা-মার পরকীয়ার বলি হচ্ছে অনেক নিষ্পাপ শিশু। সংসার ভাঙছে, সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে, খুন-ধর্ষণের পরিসংখ্যান বাড়ছে, আপনি স্বীকার করুন অথবা না করুন, এসবই ভ্যালেন্টাইন ডে-র ফলাফল। আপনি জোর করে বাইরে থেকে আমদানি করা একটি অপসংস্কৃতি আমাদের সমাজের ওপর চাপিয়ে দেবেন আর তার কুফল ভোগ করবেন না, তা কখনো হয় না।

ইউরোপিয়ানদের জীবনাচারে অনেক সৌন্দর্য আছে। তারা সত্যবাদী, নিয়মানুবর্তী, পরোপকারী, পরিচ্ছন্নতাপ্রিয়। কিন্তু শালীনতার প্রশ্নে তাদের জীবনাচার বড্ড কুৎসিত। বিপরীতে বাংলাদেশের মানুষের শালীনতাবোধ ঈর্ষণীয়। এখনো এই দেশের দুটি তরুণ-তরুণী জনসম্মুখে যা খুশি তাই করতে পারে না। এখনো আমাদের পারিবারিক বন্ধন মজবুত। এখনো আমরা রাত নামলে ঘরে ফেরার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। স্ত্রী-সন্তান এবং বাবা-মার কাছেই আমাদের সকল সুখের জিয়নকাঠি লুকানো বিশ্বাস করি। আর এটাই তাদের চোখের বিষ। আমাদের শালীনতার সুন্দর দেয়ালকে তারা ধসিয়ে দিতে চায়। আমাদের পারিবারিক বন্ধনকে তারা আলগা করে দিতে চায়। তারা চায়, আমরাও তাদের মতো হয়ে পরিবারহীন জীবনযাপন করি। তাইতো উৎসবের নামে আমাদের সমাজে অশ্লীলতা বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিতে তাদের এত তাড়া।

এই অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের ব্যবস্থা নেয়া উচিত। রাষ্ট্র যদি ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, প্রতিটি বিবেকবান মানুষের উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্ক হওয়া। আমাদের সন্তান, আমাদের পরিবার, সর্বোপরি মানবসভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে হলেও সভ্যতাবিরোধী এই অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে আমোদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের ধর্মীয় এবং দেশীয় সংস্কৃতি একটা দরিদ্র নয় যে বাইরে থেকে অমুসলিমদের সংস্কৃতি আমদানি করতে হবে।

আল্লাহ তা’আলা আমাদের যুব সমাজকে রক্ষা করুন। তথাকথিত ভালোবাসা দিবসকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করার তাওফিক দান করুন। গোনাহমুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ