Monday, June 16, 2025

‘ছেলের সঙ্গে আমারও মৃত্যু হয়েছে, এখন খুশি উদযাপন করবে কে?’

আরও পড়ুন

‘আফনানের ভালো ফলাফল আমার কাছে খুশির খবর। কিন্তু যাকে নিয়ে আমি খুশি উদযাপন করবো, সেতো আমার কাছে নেই। ২ মাস ১২ দিন আগে গুলি করে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। ছেলের সঙ্গে আমারও মৃত্যু হয়ে গেছে। এখন খুশি উদযাপন করবে কে?’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে লক্ষ্মীপুরের আফনান পাটওয়ারীর এইচএসসি পাসের খবরে বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে তার মা নাছিমা আক্তার কান্নাজনিত কন্ঠে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

আফনান (১৮) এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.১৭ পেয়ে সফলতার সঙ্গে পাস করেছেন। তার এই অর্জন পরিবারের জন্য খুশির খবর হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু খুশির এ সময়ে হাসিখুশি থাকতে পারছেন না তার মা নাছিমা আক্তার, বোন জান্নাতুল মাওয়া ও অন্যান্য স্বজনরা। এ আনন্দের সময় আফনানের শূন্যতায় সীমাহীন কষ্ট কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে মা ও বোনকে।

আরও পড়ুনঃ  চাঁদাবাজির মামলায় কৃষকদল নেতা গ্রেপ্তার

মা নাছিমা বলেন, ওরা আমার কোল শূন্য করে দিয়েছে। তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। এইচএসসি পাসের পর বিদেশে পড়তে যাওয়ার কথা ছিল। আমি এখন বিদেশে পড়তে পাঠামু কারে? আমার আফনান তো আমার কাছে নাই।

আফনান লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর গ্রামের বাস টার্মিনাল এলাকার মৃত সালেহ আহমেদ ও নাছিমা আক্তার দম্পতির ছোট ছেলে। তারা ২ ভাই-বোন। আফনান লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরি কলেজের ছাত্র ছিলেন। তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় (রোল: ১৭৮০৩৮ ও রেজিস্ট্রেশন: ১৯১১৩৫৩৩৬৭) দিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  দীর্ঘ ১১ বছর পর দিগন্ত টিভিতে সাংবাদিকরা, ফিরবে সম্প্রচারে

আফনানের বড় বোন জান্নাতুল মাওয়া কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, আমার ছোট ভাই আফনানের পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। সে ৪.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। এ পাশের কথা আমি কি ভাবে তাকে জানাবো। যদি কবরে গিয়ে জানানো ব্যবস্থা থাকতো, তাহলে তাকে জানাতাম। আমার ভাই আমার শুধু ভাই ছিল না, সে ছিল আমার বন্ধু। কয়েক মাস আগে আমার বাবা মারা গেছেন। আমি কাঁদতাম। সে সান্ত্বনা দিতো। এখন কে আমায় সান্ত্বনা দেবে? আমার ভাইয়ের খুনিদের প্রশাসন কেনো গ্রেফতার করে না। তারা কি চোখে দেখে না, কানে শুনে না। নাকি কানে তুলা দিয়েছে। আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

আরও পড়ুনঃ  প্রতিটি ঘাটে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চার্ট দৃশ্যমান করার নির্দেশ

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আফনান। পরে ১৪ আগস্ট আফনানের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান করে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ