Sunday, June 15, 2025

মেয়েকে ধর্ষণ, বাবাকে হত্যা করে মেয়ের আত্মসমর্পণ

আরও পড়ুন

ঢাকার সাভারে মর্মান্তিক একটি ঘটনায় বাবাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ছুরি মেরে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মেয়ের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভোরে সাভারের একটি ভাড়া বাসা থেকে ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণীকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার বিস্তারিত জানাজানি হয় মেয়েটিরই জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করে বাবাকে হত্যার বিষয়টি জানানোর পর।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার এবং অভিযুক্ত মেয়েটিকে আটক করেছে। এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।

আরও পড়ুনঃ  প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এনসিপি ও বিএনপির

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তরুণী জানান, তিনি নিজের বাবার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে নাটোরের একটি আদালতে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। তাঁর দাবি, ২০১৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে বাবা তাঁকে ধর্ষণ করতেন। তরুণীর মা ছিলেন নিহত ব্যক্তির তৃতীয় স্ত্রী। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মায়ের মৃত্যু হয় মেয়েটির। এরপর থেকেই বাবার সঙ্গে থেকে বড় হন তিনি।

তরুণীর অভিযোগ, মামলা করার পর থেকে নানা সময়ে তাঁকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন বাবা। এমনকি মেয়ের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে পাল্টা মামলা করেও হয়রানি করেন। পরবর্তীতে সাভারে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন নিহত ব্যক্তি। চলতি বছরের শুরুর দিকে সেই বাসায় মেয়েটি গিয়ে ওঠেন। তারপর থেকেই শুরু হয় মামলাকে ঘিরে চাপ, তর্ক এবং মানসিক অস্থিরতা।

আরও পড়ুনঃ  প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে স্বস্তি পেতে করণীয় নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে মেয়েটি খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবাকে খাওয়ান। এরপর ভোররাত চারটার দিকে বাবার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন তিনি। পরিকল্পিত এই হত্যার আগে সাবলেট দেওয়া একটি কক্ষের দরজায় বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখেন তিনি, যাতে কেউ এসে বাধা দিতে না পারে।

নিহত ব্যক্তির বয়স ৫৭ বছর। অনলাইনে কাপড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। বাসাটিতে তিনটি কক্ষ ছিল, যার মধ্যে একটি ছিল সাবলেট, বাকি দুই কক্ষে বাবা ও মেয়ে থাকতেন।

আরও পড়ুনঃ  একাত্তরের রাজনীতি ভুল ছিল বলেই চব্বিশ ঘটেছে: শারমীন এস মুরশিদ

এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম হতবাক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রাথমিক তদন্ত ও স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশের ধারণা, হত্যাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের পারিবারিক নির্যাতন ও মানসিক চাপ।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ