Monday, June 16, 2025

আইন মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি : ভারতের গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন

আরও পড়ুন

নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া নামক অনলাইন পোর্টালে ‘জম্মু-কাশ্মিরে হামলার পর বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টার সঙ্গে শীর্ষ লস্কর-ই-তৈয়বা অপারেটিভের’ সাক্ষাৎ শিরোনামে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মিথ্যা, মানহানিকর ও অদায়িত্বপূর্ণ।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এক বিবৃতিতে জানান, গত ২৪ এপ্রিল নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া নামক অনলাইন পোর্টালে ‘জম্মু-কাশ্মিরে হামলার পর বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টার সঙ্গে শীর্ষ লস্কর-ই-তৈয়বা অপারেটিভের সাক্ষাৎ’ শিরোনামে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা, মানহানিকর ও অদায়িত্বপূর্ণ অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে। যা মিথ্যা, সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও বাস্তবতাবিবর্জিত।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে সাম্প্রতিক জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে হত্যাকাণ্ডের পর লস্কর-ই তৈয়বার একজন শীর্ষস্থানীয় সদস্যের সাথে আইন উপদেষ্টার সাক্ষাৎ হয়েছে। যা সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও বাস্তবতাবিবর্জিত

আরও পড়ুনঃ  এবার সিরিয়া দখলে নেমেছে ই'সরাইল

মিথ্যা দাবি ও ভুল তথ্য সংশোধনে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হেফাজতে-ইসলাম নেতাদের ভুলভাবে চিহ্নিতকরণ করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আইনের মধ্যে কাজ করা ইসলামিক স্কলার ও সংগঠনগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। প্রতিবেদনে উল্লিখিত ব্যক্তিরা হেফাজতে ইসলামের নেতা, যারা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে যুক্ত নন। শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে হেফাজতে ইসলামের হাজারো সদস্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়। নতুন সরকারের ন্যায়বিচার ও আইনি সংস্কারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে, আইন উপদেষ্টা ড. নজরুল তার দাপ্তরিক দায়িত্বে হেফাজতের একটি প্রতিনিধিদলের সাথে তাদের ন্যায্য দাবি উপস্থাপনের জন্য বৈঠক করেন। এই বৈঠকটি নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ার উল্লিখিত তারিখের কমপক্ষে তিন দিন আগে অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে শুধু আইনি বিষয়াবলি আলোচিত হয়। প্রতিনিধিদল আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে কিছু মামলার তালিকা জমা দেন এবং উপদেষ্টার সঙ্গে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ছবি তোলার অনুরোধ করেন, যা এই ধরনের বৈঠকের রীতি।

আরও পড়ুনঃ  নেশার টাকা না দেয়ায় মাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলে আটক

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হেফাজতে ইসলামের নেতারা বাংলাদেশের ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠা কমিশন (কনসেনসাস বিল্ডিং কমিশন) কর্তৃক শুরু করা রাজনৈতিক সংলাপে অংশগ্রহণকারী নেতাদের মধ্যে অন্যতম। পাশাপাশি, পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই গ্রুপের বৈঠকসমূহ তাদের বর্তমান রাজনৈতিক ভূমিকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সংশ্লিষ্টতাকে প্রতিফলিত করে।

হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো স্বাধীন সংস্থাগুলো পূর্ববর্তী শাসনামলে হেফাজত সদস্যসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়নের নথি প্রকাশ করেছে এবং এর নিন্দা জানিয়েছে। এসব প্রতিবেদনে তাদের বিরুদ্ধে আনা মামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষিত তুলে ধরা হয়েছে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া কার্যক্রম সম্পর্কে ভুল উপস্থাপনা বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, আইন উপদেষ্টা ফেসবুকে ভারতীয় নেতাদের পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত করার উদ্দেশ্যে একটি উত্তেজনাপূর্ণ পোস্ট শেয়ার করেছেন। বাস্তবে, উক্ত পোস্টটি একজন ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে লেখা হয়েছিল। উপদেষ্টা হামলার নিন্দা জানিয়ে একটি ক্যাপশনসহ এটি শেয়ার করেছিলেন। ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে তিনি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় পোস্টটি মুছে ফেলেন।

আরও পড়ুনঃ  'এটা আমার লাস্ট বিসিএস ছিল, আমাকে মেরে ফেলেন ভাই'

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, আইন উপদেষ্টা পেহেলগামের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান, শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও হামলার দ্রুত বিচার কামনা করেন। নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ার এই অসতর্ক ও অপ্রমাণিত প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নীতিমালা ও সত্যনিষ্ঠতা থেকে বিপজ্জনক বিচ্যুতি। আমরা সকল মিডিয়াকে দায়িত্বশীল প্রতিবেদন ও প্রকাশনার আগে সত্যতা যাচাইয়ের আহ্বান জানাই।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ