নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের শিধুলী হাটের দানের টাকার ভাগ চেয়ে বিএনপি নেতা আব্দুল আজিজের দেয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মাদরাসা পরিচালনা কমিটির আটজন সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের করা হয়েছে। ওই মামলায় গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ৮ জন গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
এই ঘটনার প্রতিবাদ ও কারাবন্দি ব্যক্তিদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ‘শিধুলী, চলনালী, পোয়ালশুড়া হযরত ওসমান (র.) হাফেজিয়া ও কওমি মাদরাসা’ প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের গুরুদাসপুর উপজেলা শাখার অর্থ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা ফরিদুল ইসলাম, গ্রেপ্তারকৃত শাহাদত হোসেনের স্ত্রী রাশিদা খাতুন, লিটন হোসেনের স্ত্রী লাবনী আক্তার, মাদরাসা কমিটির সদস্য হযরত আলী, হায়দার আলী, শিক্ষানবিশ আইনজীবী মো. জার্জিস হোসেনসহ অনেকে।
লিখিত বক্তব্যে রাশিদা খাতুন বলেন, মাদরাসাটি গ্রামের মানুষের দান ও শ্রমে পরিচালিত হয়। হাটের ব্যবসায়ীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দান করে থাকেন। এই দানের টাকার অর্ধেক দাবি করেন বিএনপি নেতা আব্দুল আজিজ। তার প্রস্তাব না মানায় ছাত্রদল নেতা রুবেল হাসানকে দিয়ে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা করিয়ে আমার স্বামীসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করানো হয়।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য হযরত আলী জানান, ২৭ রমজান মাদরাসার অফিস কক্ষে বসে আব্দুল আজিজ ওই প্রস্তাব দেন এবং তার ছেলে সোহাগ ও ছাত্রদল নেতা রুবেল হাসানের মাধ্যমে টাকার ভাগ নেয়ার প্রস্তাবও করেন। প্রস্তাবে সম্মতি না দেয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধমূলক মামলা দায়ের করান।
মাদরাসাটির মহতামিম মো. ফাতিহুল কবীর বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে যৌথবাহিনী মাদরাসা প্রাঙ্গন থেকে ৮ জন সম্মানিত ব্যক্তিকে কথা বলার নামে তুলে নিয়ে যায়। পরে মাদরাসার নামে চাঁদা তোলার অপপ্রচার চালিয়ে মামলা দেয়া হয়। এটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মাদরাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, হাজী মকবুল হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, ইসলামি আন্দোলনের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, লিটন হোসেন, রিপন আলী, আলহাজ্ব বদিবর এবং ইউনিয়ন জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি মওদুদ আহম্মেদ মনি।
মামলার বাদী ধারাবারিষা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল হাসান বলেন, মাদরাসা কমিটির লোকজন রশিদের মাধ্যমে টাকা তোলেন, তাই আমি মামলা করেছি।
অন্যদিকে বিএনপি নেতা আব্দুল আজিজ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাদরাসা কমিটির সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তারা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী লোক। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাকে জড়িয়ে এই নাটক সাজানো হয়েছে।