Friday, March 14, 2025

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে কী বলছেন আইন বিশেষজ্ঞরা?

আরও পড়ুন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন জানিয়ে গত ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। কিন্তু আড়াই মাসের ব্যবধানে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বললেন তিনি।

একজন সাংবাদিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের কোনো দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই। এর প্রতিক্রিয়াও হয়েছে বেশ কড়া। দাবি ওঠেছে তার পদত্যাগের। অন্তর্বর্তী সরকারও বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি।

এ বিষয়ে গত ২১ অক্টোবর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ‘৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেয়া রাষ্ট্রপতির ভাষণ এবং এরপর একের পর এক কার্যাবলীর মধ্যদিয়ে এটা তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। এখন প্রায় আড়াই মাস পর এসে উনি যদি বলেন তিনি পদত্যাগপত্র দেননি তাহলে এটা এক ধরনের স্ববিরোধিতা, শপথ ভঙ্গ হয় এবং এ পদে ওনার থাকার যোগ্যতা আছে কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন আসে।’

আরও পড়ুনঃ  ছাত্র আন্দোলন নিয়ে সেদিন যা বলেছিলেন ব্যারিস্টার সুমন

এদিকে, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে রাজপথেও ঝাঁঝালো প্রতিবাদ করেছেন গণ-অভ্যুত্থানকারী শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যার পর থেকে বঙ্গভবন এলাকায় অবস্থান নেন তারা।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রাষ্ট্রপতি বিদায় নেবেন কীভাবে? সংবিধানের ৫২, ৫৩ ও ৫৪ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির অপসারণ বা পদত্যাগ প্রসঙ্গে বলা হলেও সেক্ষেত্রে সংসদ কার্যকর থাকতে হবে। এমনকি রাষ্ট্রপতি অনুপস্থিত থাকলে স্পিকার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। কিন্তু তিনিও পদত্যাগ করেছেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অভ্যুত্থান কিংবা বিপ্লব পরবর্তী সময়ে সংবিধান মেনে না চলার অনেক নজির রয়েছে। তবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ কিংবা তাকে সরিয়ে দেয়া হলে কী ঘটতে পারে — তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী মতামত দিয়েছেন আইনজীবীরা।

আরও পড়ুনঃ  ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও লংমার্চের হুঁশিয়ারি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহসানুল করিম বলেন, ‘অন্য কাউকে রাষ্ট্রপতি করা হলে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সেটা এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের ক্ষমতা যদি প্রধান বিচারপতির কাছে যায়, সেক্ষেত্রে সেপারেশন জুডিশিয়ারি থাকছে না।’

তবে মানবাধিকার আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘যদি চায় প্রধান বিচারপতিকে রাষ্ট্রপতি বানাইতে হবে। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে — প্রধান বিচারপতি কে হবেন? পরবর্তী যিনি আছেন তিনি। এতে এমন সংকট হবে বলে আমার কাছে মনে হয় না।’

আরও পড়ুনঃ  এবার বাংলাদেশের কাছে ইলিশ পাঠানোর আবদার ভারতের

গণ-অভ্যুত্থানের পর সংবিধানে কী আছে, সেটি এ মুহূর্তে বিবেচ্য নয় বলেও মনে করেন জেড আই খান পান্না।

ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আগে মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০৬ অনুযায়ী। অন্তর্বর্তী সরকারও এখন রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ এবং তারপর কী করতে হবে — এ নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের পরামর্শ নিতে পারে।’

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ